16 Dec, 2023 9:55 PM
শোধ করা যায় না বাবা-মায়ের ঋণ
একসময় বাবা বলতেন, তুই যখন বাবা হবি, তখন দেখবি, কত কষ্ট করে তোকে বড় করেছি।
২.
বাবা না বললেও কিছুটা বুঝার চেষ্টা করতাম। যখন ৫ম কি ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ি। একবার আমার প্রচণ্ড জ্বর উঠল। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বাজার হয়ে বাড়িতে যাবো। কোনোরকম বাজার পর্যন্ত এসেছি। জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে। বাজারে একটি দোকানের বেঞ্চে শুয়ে পড়লাম। বাবা তখন বাজারে নেই। কোথাও যেন গিয়েছিলেন। জ্বরের ঘোরে ছিলাম।
কিছুক্ষণ পরে বাবা বাজারে আসলেন। আমাকে দেখলেন। উঠার শক্তি নেই। আমাকে ঘাড়ে করে প্রায় এক কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে
বাড়িতে নিয়ে গেলেন।
একজন বাবা তার সন্তানের জন্য এমন-ই কষ্ট করেন। সব বাবা-ই এমন হয়।
৩.
আমি বাবা হয়েছি মাস চারেক আগে। বাবা হওয়ার কথা শুনে সেদিন-ই শরীর অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও মা খাগড়াছড়ি থেকে ঢাকায় এসেছিলেন।
ছেলে ছোট। বাড়িতে গিয়ে রোজার ঈদ, কোরবানির ঈদ- কোনো ঈদ-ই ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও যেতে পারি নি। কয়েকদিন আগে, বাবা আমাদেরকে কোনো কিছু না জানিয়ে দেখার জন্য চলে এসেছেন।
৪.
আমি এখন বাবা ও ছেলে দুইজনের দিকেই তাকাই। ছেলের চাঞ্চল্য দেখে খুশি হই। নিজের ভেতরটা বড় হয়ে যায়।
আর বাবার দিকে দেখি। বয়সের ছাপ তার শরীরে কিভাবে দাগ কাটছে।
এখন বুঝি, বাবা-মায়ের ঋণ আমরা কখনো-ই শোধ করতে পারবো না।